ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

কুতুবদিয়ায় মুখ থুবড়ে পড়েছে পর্যটনখাত উন্নয়নের মেগা প্রকল্প

এম.এ মান্নান, কুতুবদিয়া :: পর্যটনের অপার সম্ভাবনার সাগরঘেরা কুতুবদিয়া শীত মওসুমে পর্যটকে মুখরিত থাকে। বেড়াতে এসে ভ্রমন পিপাসুরা খুশি হলেও সরকারি গৃহীত পর্যটনখাতকে এগিয়ে নিতে ২০১৮ সালে হাতে নেয়া মেগা প্রকল্পটি মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। ৯০ শতাংশ কাজ শেষ করে আর এগোয়নি মেগা প্রকল্প। উপজেলা সদরে সিটেজেন পার্ক, বিভিন্ন প্রজাতির জীব বৈচিত্রের মুরাল, বড়ঘোপ জেটি ঘাটের পাশে মৎস্য মুরাল, বিশ্রামাগার, পশ্চিম সৈকতে বিশ্রামাগার ইত্যাদি সংস্কারে নেই কোন উদ্যোগ।

দ্বীপ উপজেলার ২৫ কিলোমিটার জুরে বালিয়াড়ি সমুদ্র সৈকত, দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প, ঐতিহাসিক বাতিঘর(যার জন্য বিখ্যাত কুতুবদিয়া), সমুদ্র ঘেষা ঝাউবাগান,ঐতিহাসিক কালার মার মসজিদ, কুতুব আউলিয়ার মাজার, আকবর শাহের মাজার,দেশ বরেন্য সাধক ওলী হযরত শাহ আব্দুল মালেক আল কুতুবী(রহ) এর মাজার সহ রয়েছে নানা দৃষ্টি নন্দন প্রকৃতির পরিবেশ।
ফলে দেশে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুঁটে আসছে ভ্রমণ পিপাসুরা। এমনকি বিদেশী পর্যটকও এখন ঘুরে যাচ্ছে এই দ্বীপ থেকে। পর্যটন শহর কক্সবাজারের চেয়ে নিরাপদ রাত্রি যাপনে আন্তর্জাতিক মানের হোটেল সমুদ্র বিলাস সহ রয়েছে বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেল। ছুটির দিনে সমুদ্র সৈকত, বায়ু বিদ্যুৎ ও বাতিঘরের আশ-পাশে মুখরিত থাকে আন্ত:জেলা ও স্থানীয় পর্যটকে।
দ্বিতীয়বার বেড়াতে আসা বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিউটিফুল বাংলারদেশ ট্যুরস এন্ড ট্রাভেল্স এর সাবেক চীফ এক্সিকিউটিভ ও ইউএনডিপি‘র সাবেক প্রজেক্ট অফিসার সেতু রাইসুল ইসলাম বলেন, সাগর কন্যা কুতুবদিয়ার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর জীবনদর্শন, আতিথেয়তা তাকে মুগ্ধ করেছে। জীবিকায়নে জেলেদের নিত্য জীবনযুদ্ধের মুহূর্তগুলো কাছ থেকে দেখার আলাদা একটা সুযোগ রয়েছে পর্যটকদের জন্য। এমন একটি আকর্ষনীয় দ্বীপে তিনি ফের আসবেন বলেও জানান।

সাবেক জ্বালানি ও খনিজ, তথ্য এবং স্বাস্থ্য সচিব এ.এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, উন্নত দেশ সমূহে সমুদ্র উপকূলবর্তী দ্বীপগুলোকে আকর্ষনীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হয়। দূর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের দেশে এ জাতীয় কোন উদ্যোগ দেখছিনা। কুতুবদিয়া দ্বীপের পর্যটর ক্ষেত্রে অমিত সম্ভাবনা রয়েছে।

অদ্যাবধি এ সম্ভাবনা কাজে লাগানোর কোন উল্লেখযোগ্য চেষ্টাই করা হয়নি। কুতুবদিয়াকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়তে হলে উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকেই। তবে সরকারের একার পক্ষে এ কাজ সন্তোষজনকভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না। সরকারি বেসরকারি সমন্বিত যৌথ উদ্যোগ একাজে প্রয়োজন। সরকারকে নীতি সহায়তা সহ অবকাঠামো উন্নয়ন এর দায়িত্ব নিতে হবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দ্বীপের সাথে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি করা প্রয়োজন।

পর্যটকদের থাকা-খাওয়ার সুবিধা সৃষ্টি সহ সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। বেসরকারি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রণোদনা দিতে হবে। দ্বীপের দীর্ঘ সীবিচকে পর্যটক বান্ধবরূপে গড়ে তুলতে হবে। সেন্ট মার্টিনের মতোই এক বা দুদিনের প্যাকেজ ট্যুর ব্যবস্থা করা যেতে পারে। পর্যাপ্ত প্রয়োজনীয় সুবিধা ও প্রণোদনা দেয়া হলে বেসরকারি খাত এ উদ্যোগে এগিয়ে আসবে। কুতুবদিয়ার পর্যটন সম্ভাবনা কাজে লাগানো হলে তা দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক অকদান রাখবে বলে তিনি মনে করেন।

কুতুবদিয়ায় পর্যটন বিকাশে হাতে নেয়া মেগা প্রকল্পের বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা মো: মিজানুর রহমান বলেন, আগের কর্মকর্তা থাকাকালীন এটি প্রায় পুরোটা বাস্তবায়ন করে গেছেন। সিটিজেন পার্ক সহ অন্যান্য ম্যুরাল সংস্কারে নতুন প্রকল্প নেয়া না হলে সংস্কার করা সম্ভব নয় ।

পাঠকের মতামত: